সাপ্লাই চেইন এবং আমি (2)

I learn a lot from them (in my SCM Career)

YEAR 2008-2009

My first Boss was Mr. Zaman Ashraf, Head of Purchase, Rangs PharmaCeuticals (a concern of RANGS GROUP. যেহেতু প্রথম জব ছিল কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডের যা কিছু জানার বা শেখার তার হাত ধরেই। তিনিই প্রথম এসাইন করেন এটা করেন, সেটা করেন, এভাবে করেন, ইত্যাদি ইত্যাদি। ধন্যবাদ স্যার কে। এখন স্যার আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টে আছেন। আমার পোস্ট, আর্টিকেলে লাইক দেন, কমেন্টস করে ইন্সপারেশন দেন।

Facebook Comments (from my FB profile)
আশরাফ জামান স্যারের আন্ডারে আমরা দুইজন ছিলাম এক আমি (কমার্শিয়াল অফিসার হিসাবে) আর এক ছিলেন Mohammad Ullah ভাই। (সিনিয়র কমার্শিয়াল অফিসার হিসাবে)। লোকাল প্রকিউরমেন্টটা আমি আর জামান স্যার দেখতাম মোহাম্মদ উল্লাহ ভাই এলসি টা দেখতেন। তেমন সুযোগ হয়নি তার সাথে ক্লোজলি কাজ করার তারপর কমবেশি শিখেছি।

এরপর যে ভদ্রলোকটির নাম উল্লেখ করতে চাই তিনি হলেন Komol Paul স্যার, এসিস্টেন্ট ম্যানেজার অডিট। আসলে র‍্যাংগস ফার্মাতে প্রকিউরমেন্ট কমিটি ছিল, সেখানে তিনিও ছিলেন একজন। যেকোন পারচেজের ক্ষেত্রে কোটেশন কালেক্ট করার পর সিএস তৈরি করে পারচেজ কমিটি ভেন্ডার নেগোসিয়েশনের জন্য কল করতো। তারপর কমল স্যার এক সুযোগে আমাকে ডাকতেন, তিনি ডেকে কাছে বসিয়ে তার বিজনেস কার্ড হোল্ডারটা বের করতেন বলতেন। আমার সব মার্কেট ঘুরাফিরা শেষ।এখানে বসেই খোজ খবর নিতে পারি। তারপরও বেটার হচ্ছে মার্কেটে যেয়ে মানে ফিল্ডে যেয়ে রিয়েল সিনারিয়ো জেনে আসা। আমাকে বলতেন আপনি যাবেন, আমি আপনাকে সব ঠিকানা দিয়ে দেবো। যেয়ে নিজের পরিচয় গোপন রেখে এই পণ্যের দাম যাচাই করে আসবেন, আর দোকানদারের কার্ড নিয়ে আসবেন। আমিও তার কথামত বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করতে যেতাম, মার্কেট যাচাই এবং সোর্স চিনতে। কাজটা বেশ কঠিন ছিল। কারন অধিকাংশ সময় যেতে হতো পুরাণ ঢাকা (চকবাজার, মিডফোর্ড, ইমাম গঞ্জ, আলুনাকার, আগামসিলেন, নর্থ সাউথ রোড, ইসলামপুর, শাখারি বাজার, ইত্যাদি)। যেখানে রিক্সাও চলেনা, জ্যাম লেগেই থাকে। চলতে হেটে হেটে। আমি মার্কেট থেকে ঘুরে সব সময় যে সঠিক খবর পেতাম তা নয়, তবে ভালোই চেনা জানা হতো। তারপর যখন তিনি ভেন্ডার নেগোশিয়েনে বসতেন তখন তিনি সাপ্লাইয়ারের সোর্স বা মুল আমদানিকারকের নাম ধরে বলতেন এটা ওমুক কোম্পানি মেইন ইম্পোর্টার আপনারা বেশি দাম চাচ্ছেন। ইত্যাদি ইত্যাদি। তাতেই অধিকাংশ সাপ্লাইয়ার কুপোকাত হয়ে যেত। আর তিনি আমাকে শিখিয়েছেন - সব সময় গোড়া খুজে বের করবেন। হাত বদল হলেই দাম বাড়বে। তারমত নোগশিয়েটর আমি আজ ২০১৯ সাল পর্যন্ত দেখিনি। আমি এখনো বিশ্বাস করি - কমল স্যার যদি নোগোশিয়েট করে কোন জিনিস ক্রয় করে তাহলে এর থেকে কমে সেই পণ্য পাওয়া সম্ভব নয়। ধন্যবাদ স্যার আপনাকে। তবে এখানে একটা সত্য স্বীকার করতে চাই, মাঝে মাঝে মার্কেটে ঘুরতে যেয়ে মনে হতো - আচ্ছা আমি তো অডিটের লোক না, কমল স্যার অফিসে এসিতে বসে তার কাজ আমাকে দিয়ে করিয়ে নিচ্ছে! কিন্তু এখন বুঝি সেটা আমার লাইফে কত বড় উপকার করেছে। এখন আমিও ঐ একই টেকনিক এপ্লাই করি। মুল সোর্স খুজি, আমার কাছেও এখন ৩০০০+ বিজনেস কার্ড রয়েছে। নতুন কোন প্রোডাক্ট সোর্সিং বা নতুন কোন কাজ হলেই নিজে চলে যাই, ফিজিক্যালি দেখতে, শিখতে। কারন আমি জেনে নিয়েছি লাইফে প্র্যাক্টিক্যালি শেখা  জিনিস টা একবার। আমাকে এখন আর হরহামেশা পুরাণ ঢাকা যেতে হয় না। আর এরজন্য আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরন করি আপনাকে কমল পাল স্যারকে। স্যারের সাথে এখনো কমবেশি যোগাযোগ হয়। নতুন চাকরি পাইলে স্যারের ফেসবুক ইনবক্সে পাটাই। কিছু কথা হয়।  ভালো থাকবেন স্যার সব সময়।

২০০৯-২০১১ সাল
আমি ইনসেপ্টা ফার্মাতে সাপ্লাই চেইন ডিপার্টমেন্ট এ এসিস্ট্যান্ট অফিসার হিসাবে জয়েন করলাম। এখানে এসেই মুলত আমার হাতে এলসি এর হাতে খড়ি। কিভাবে লিখাটা বর্ননা করবো ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। এক কথায় বলি - আজ আমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছি এর মুলভিত্তি টা গড়ে দিয়েছে ইনসেপ্টা ফার্মা। এত কিছু জেনেছি, শিখেছি, প্র‍্যাক্টিস করার সুযোগ পেয়েছি তা লিখা সম্ভব নয়। আর এজন্য যারা আমাকে গাইড করেছেন তাদের অন্যতম মসিউর ভাই। 

মসিউর ভাই সত্যি অসম্ভব সুন্দর মনের একজন মানুষ। তার কাছ থেকে শিখেছি কমার্শিয়া ব্যাংকিং কি জিনিস। ব্যাংকের বিভিন্ন বড় বড় কর্মকর্তাদের সাথে পরিচয়ের সুযোগ পেয়েছি তার মাধ্যম দিয়েই। তবে আমার নিজের মধ্যে জানার প্রবল আগ্রহ ছিল। মসিউর ভাইয়ের থেকে কাজ শেখার পর বড় পাওয়া ছিল তিনি আমার কাজে উপর সম্পুর্ণ আস্থা রাখতেন। ফরেন সাপ্লাইয়ারদের সাথে ইমেল কমিউনিকেশন দেখে তিনি আমাকেই অনারশীপ দিয়ে দিতেন। কোথাও ভুল হলে গাইড করতেন। আমরা মাত্র তিনজন ছিলাম কমার্শিয়াল সাইড দেখতাম। সাতটা ব্যাংক আর ২-৩ টা অনগোয়িং প্রজেক্ট ইম্পোর্ট। মাসে গড়ে ২০০+ এলসি হ্যান্ডেল করতাম। সত্যি কথা বলতে কাজ করে বেশ মজা পেতাম। আমার ডেস্কে ছিল স্কানার, প্রিন্টার, ফ্যাক্স মেশিন, টেলিফোন আর ডেস্কটপ কমিউটার। আমি কম্পিউটার বিষয়ে মোটামুটি দক্ষ ছিলাম, বাংলা টাইপ, ফটোশপ, এডিটিং, ইমেল যাদের ইমেল নেই তাদের ফ্যাক্স করতাম। মোট কথা আমার টেবিলে এসে কেউ ফিরে যেত না। আমার একটা খেতাব জুটেছিল "মুসকিল আছান"। মসিউর ভাইয়ের একটা কথা আমার খুব মনে পড়ে সেটা হলো - রিজাইন দেওয়ার পর তিনি আমাকে বলেছিলেন "ভাই, আপনি চলে যাচ্ছেন, যান। তবে আমি জানি আমি হারাচ্ছি।" একজন লাইন বসের কাছ থেকে এর থেকে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে। মসিউর ভাই এখনো আছেন আগের জায়গা তে, আমিই শুধু লাফিয়ে বেড়াচ্ছি। মাঝে মধ্যে দরকার হলে কল দেই মসিউর ভাইকে। ভাল থাকবেন প্রিয় মসিউর ভাই।

নবিন ভাই, ছিলেন খুব অল্পভাষী ঠান্ডা মেজাজের মানুষ নীরবে কাজ করে যান। তার থেকে শিখেছি অনেক। ডকুমেন্টাশেন কাকে বলে, কত প্রকার, কি কি। বেশ হেল্পফুল ছিলেন তিনি। ধন্যবাদ নবিন ভাই, অনেক অনেক ভাল থাকবেন। 

এরপর যে মানুষটির কথা বলবো তিনি নকিব স্যার। তিনি আমাদের সিনিয়র, ফরেন এবং লোকাল প্রকিউরমেন্ট দেখতেন। একটু অন্যটাইপের আলাদা মানুষ তবে আমাকে তিনি খুব পছন্দ করতেন। কম বেশি গাইড করতেন। সাপ্লাই চেইনের বাইরে তার অনন্য গুন ছিল তিনি লিখালিখি করতেন। কবিতা লিখতেন, লিটলম্যাগ লিখতেন। আমার বিচরন ছিল সেই ফিল্ডে। ফেসবুকে তার আমার মিউচুয়াল ফ্রেন্ডের সংখ্যা ৫০+ ছিল। কাজের ফাকে হালকা পাতলা কথা হতো। মাঝে মধ্যে ফেসবুক উজিং টিপস নিতো আমার থেকে। রিজাইন দেবার পর আমি তাকে সেভাবে ফেস করতে পারিনি। কারণ আমি দেখেছি তিনি কি করেছেন আমাকে ওনার টীমে ধরে রাখার জন্য। অনেকে এ পর্যন্ত বলেছে নকীব ভাই কারও জন্য এভাবে কোন বিষয় নিয়ে ফাইট করে নাই, আমার জন্য যা করেছে সিনিয়র ম্যানেজমেন্টের সাথে। এটাও আমার জীবনে বড় পাওয়া। ভাল থাকবেন কবি। 

Post a Comment

0 Comments