সাপ্লাই চেইন এবং আমি (1)


এটা যেহেতু আমার পারসোনাল ব্লগ, এখানে আমি আমার কাহিনী লিখতেই পারি। আমি চাই আপনিও লিখে ফেলুন আপনারটা। আরে ভাই, কোন উদ্দেশ্য নেই এর পেছনে। আর যে উদ্দেশ্যেই হোক দেশের ২% প্রফেশানাল যদি একটা করে ব্লগ লিখতো, দেশে ২০% প্রফেশনালের জন্ম হতো। ওকে, এবার শুরু করি, আমি কিভাবে সাপ্লাই চেইন এ ক্যারিয়ার শুরু করলাম?

২০০৭ সাল

যতদুর মনে পরে, ২০০৭ সালের মাঝামাঝি BBA  & MBA (Major in HRM) নিয়ে পাশ করলাম। মুলত ফাকিবাজ টাইপের অংকে কাছা হওয়ায় মেজর হিসাবে HRM নেয়া হয়েছে। তারপর বাকি অপশন গুলো ছিল Major in MKT, FIN, MGT, MIS. Marketing সম্পর্কে ধারনা ছিল রাস্তায় রাস্তায় মাল বেচে বেড়ানো, এটা সম্ভব না, Finance & Accounting মানে হলো Math  টাও আবার টাকা পয়সার হিসাব, এটা হবে না আমাকে দিয়ে, আর বাকিগুলোর মধ্যে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সাব্জেক্টটা নতুন আসছে, একটা ভাব আছে, এই ভেবে নিয়ে ফেললাম Major in HRM. ইউনিভার্সিটির অনেক কাহিনী মনে পড়ে যাচ্ছে, সেগুলো নিয়ে এখানে না লিখি। শেষ করলাম বি বি এ। কিছুদিন চাকরি-বাকরি খুজলাম। 

এইচ আর এ তেমন কোন সার্কুলার নেই। রেফারেন্স নিয়েও দাপিয়ে বেরিয়েছি, কোন কাজ হয় না৷  কিছুদিন জব সার্চ করলাম, তখন এই আর বলে দেশে মাল্টিন্যাশনাল ছাড়া লোকাল বড় কিছু কোম্পানিতে এই আর ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। বিভিন্ন রেফারেন্স নিয়েও কোন জব মিলছে না। উপলব্ধি হতে শুরু করলো, এইচ আর ডিপার্টমেন্ট হলো অধিকাংশ কোম্পানিতে তখনও মালিক পক্ষের হাতে। এইচ আর প্রাকটিস বলে কিছু নেই, যারা এই ডিপার্টমেন্ট চালাচ্ছিল তারা হচ্ছে এডমিন ডিপার্টমেন্ট। সবাই সিভি দিতে বলে কিন্তু রেজাল্ট নেই। হঠাৎ পরিচিত ভাই বললেন একটা জব অফার আছে, র‍্যাংগস গ্রুপে, কিন্তু সেটা হিউম্যান রিসোর্স এর কাজ না। তিনি বিস্তারিত জব রেস্পনন্সিবিলিটি বললেন না, বললেন ইন্টারভিউ দিতে। ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে দেখলাম র‍্যাংগস গ্রুপের একটা ফার্মাসিউটিকালস ও আছে। র‍্যাংগস বলতে তখনো ইলেকট্রনিক পণ্যই বুজতাম। র‍্যাংগস ফার্মা নামই শুনি নাই। ইন্টারভিউ দিলাম, তেমন কোন কিছু জানতেও চাইলো না, ভাবে মনে হলো ওরা ফ্রেশার নিবে এবং আমাকে যিনি পাঠিয়েছেন তার রেফারেন্সটা স্ট্রং, চাকরিটা হবে। কিন্তু প্যাকেজটা মাত্র ৮ হাজার। তারপর খোজ খবর নিয়ে জানার চেষ্টা করলাম কাজটা কি করতে হবে? ডেস্ক জব? না ফিল্ড জব? যতটুকু জানলাম তা হলো কোম্পানির জন্য কিছু গিফট কেনা দরকার হয়, সেগুলো কেনার জন্য আমাকে নেয়া হয়েছে। ব্যাপারটা ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না। তারপরও জবটা যেহেতু র‍্যাংগস গ্রুপে, করবো বলেই সিদ্ধান্ত নিলাম। 

২০০৮ সালঃ
১লা জানুয়ারি ২০০৮ শুরু হলো প্রথম কর্পোরেট ক্যারিয়ার। র‍্যাংগস ফার্মাসিউটিকালস লিঃ এ কমার্শিয়াল অফিসার পদে নিয়োগ হলো। পরিচিত হলাম কমার্শিয়াল নামে একটা শব্দের সাথে। কিছুদিন যেতে বুঝলাম গিফট কেনাকাটা জিনিসটা কি? আসলে ফার্মা গুলোতে একটা কালচার প্রচলিত, সেটা হলো এরা ডাক্তারদের প্রচুর গিফট দেয় তাদের প্রোডাক্ট প্রমশোনের জন্য। কিছু না দিলেও প্যাড, লিটারেচার আর  কলম দেয়ই সারা বছর। তারপর আর কি অভিজ্ঞতা হলো এক কথায় বলি - ফার্মাসিউটিকাল কোম্পানি গুলো ডাক্তারের ছেলে মেয়ের স্কুল ব্যাগ, পেন্সিল বক্স থেকে শুরু ডাক্তারের বউয়ের ফ্রাই প্যান, প্রেসার কুকার সব দেয়। এসব বলছি ২০০৮ সালের কথা, এখন ২০১৯ সাল, এমনও শুনেছি এখন ডাক্তারের বউয়ের শুধু কিচেন ম্যাটেরিয়ালই দেয় না, বরং কাউকে কাউকে বউও প্রভাইড করে। কি আর করবে বলেন? কম্পিটিশনের যুগ। [দুখিঃত সামান্য নোংরা সত্যিটা বলার জন্য]

এখান থেকেই পরিচিত হলাম Requisition, Quotation, CS, Work Order   শব্দ গুলোর সাথে। তখন থেকেই শুরু হলো, আচ্ছা আমি তো এসব কিছুই পড়ে আসিনি। নিশ্চয়ই এমন কোন লেখাপড়া নিশ্চয় আছে, যেখান থেকে জানা যাবে কমার্শিয়াল এবং পারচেজ এর ব্যাপারটা। শেখার জন্য মোটামুটি চেষ্টা করেই বুঝে ফেললাম এই বিষয়ে জানার জন্য তেমন কোন কিতাব নেই আমাদের দেশে। একটা ডিপার্টমেন্ট থাকে কোম্পানিতে যারা মালামাল ক্রয় করে আর যদি বিদেশ থেকে আনতে হয় তাহলে এলসি করে। 

বিবিএ আর এমবি এ তে প্রায় পঞ্চাশ খানা কিতাব সাব্জেক্ট পড়েছি, কোথাও এমন কিছু পড়েছি বলে মনে পড়ছে না। খোজাখুজি করতে যেয়ে পেলাম একটা নতুন টপিক "Supply Chain Management". Marketing এর বইতে পাওয়া গেল টপিকটা। তেমন বিস্তারিত কিছু নেই। আর এলসি নিয়ে যিনি কাজ করেন তিনি বেশ ব্যস্ত থাকেন, তার মতো তিনি কাজ করেন। কিছুদিন যেতে না যেয়েই বুঝলাম শুধু গিফট আইটেম কেনা নয়, আমার অন্যতম কাজ হচ্ছে Work Order ইস্যু করা। কোম্পানির যত কেনাকাটার ওয়ার্ক ওর্ডার আছে তা আমার এখান থেকেই ইস্যু হয়।কোম্পানিতে সবচেয়ে বেশি গেষ্ট আসে হচ্ছে কমার্শিয়াল ডিপার্টমেন্টে [পরে বুঝেছি ওগুলো গেষ্ট না, ভেন্ডর]

যাইহোক, কিছুদিনের মধ্যে বুঝলাম শুধু গিফট নয়, প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়াল প্রকিউর করা আমাদের রেস্পনন্সিবিলিটি। আমি আসলে তখনো মানতে পারছি না, এই বিষয়ের উপর আমাদের দেশে তেমন কোন বইয়ের প্রচলন নেই। তারপর গুগুল মামার সহযোগিতায় এলো পাথারি বিভিন্ন পেপারস, আর্টিকেল ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে বাসায় নিয়ে আসতাম। সব যে পড়া হতো তেমন না, তারপরও পড়তাম। পড়তে গিয়ে দেখলাম আমরা যে পক্রিয়ায় কেনা কাটা করি, হিসাব রাখি, কবে কি আমদানি করতে হবে সেটা ঠিক করি, সবই রয়েছে পড়ার মধ্যে। আসলে আমরা প্রাক্টিস করি কিন্তু এই পুরো প্রসেসের কিছু কিতাবীয় নাম রয়েছে। যেমন- আমাদের কি পরিমান কিনতে হবে? কত দিন চলবে? স্টক আউট বা অভার স্টক থাকবে কিনা, স্টক এক্সপায়ার  হবে কিনা, কাচামাল আমদানি করতে কতদিন লাগবে? নিচে একটা তালিকা করি, কোন কাজের কি নাম?

যে কোন কেনাকাটা করতে গেলেই কিছু ফ্যাক্টর চলে আসে- 
কোন জায়গা বা কার থেকে কিনবো? এটাকে বলে SOURCE. আর যদি আপনি না জানেন যে আপনার প্রয়োজনীয় জিনিসটা কোথায় পাবেন, তাহলে আপনাকে মার্কেটে খুজতে হবে, আর এই খোজাখুজি টা হচ্ছে Sourcing. সোর্সিং করার পর কেনা (Purchasing). 

কেনার পর পণ্যটি গুদামজাত করা হয়, it's Inventory. এটাকে ঠিকঠাক করে গুছিয়ে রাখা কে বলে Inventory Management. There are two common terms in inventory management (1) FIFO - First In First Out (2) LIFO - Last In First Out. এরপর বাজারের চাহিদা অনুযায়ি সঠিক সময়ে সঠিক স্থানে, সঠিক পরিমান পণ্য সরবারহ করাকে বলে Distribution. 

অফিস চলতে লাগলো অফিসের নিয়মে। আমার মাথায় একটাই জিনিস কাজ করে, আমি পড়েছি হিউম্যান রিসোর্স যেটা আমার কাজের সাথে কোন মিল নেই। আমাকে জানতে হবে, যা আমি করছি। মেলাতে শুরু করলাম, এইচ আরের সাথে কিছু কমন আছে কি? মোটামুটি নিজে নিজে ঠিক করে নিলাম, ভেন্ডর ম্যানেজ করা কিছুটা মেলানো যায়। তারপর আরেকটা সাব্জেক্টের কিছুটা মিল করানোর চেষ্টা করলাম সেটি হলো TQM - Total Quality Management. 

ইতিমধ্যে Local Procurement  সম্পর্কে  primary idea, knowledge gather করেছি।               

I have worked with: 

লাইফের একটা স্টেজে এসে কিছুদিনের জন্য বনে গেলাম ট্রেইনারঃ




(চলবে)

  

[প্রতিদিন অফিসে যাতায়াতের সময় জ্যামে বসে বসে লিখবো, বাসায় বসে লিখে পরিবারের হক নষ্ট না করি]

Post a Comment

0 Comments